
পূর্ব ঘটনার জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের মধ্য থেকে একজনকে আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৮ টার বাস টমছম ব্রিজ এলাকায় আসলে এই ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি আটক ব্যক্তিকে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। আটক ব্যক্তির নাম মো. রাকিব। তিনি বিশ্বরোড ও টমছম ব্রিজ এলাকার অটোরিক্সা চালক। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসমুখী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহনকারী নীল বাস ( কুমিল্লা-স ১১০০-৩২) টমছমব্রীজ এলাকায় এলে হঠাৎ একটি বলাকা বাস সামনে চলে আসে। সে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসকে আটকায় এবং ২০-২৫ জন লোক লাঠি-সোটা নিয়ে বাসে ভাংচুর শুরু করে। পরে হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের উপরেও চড়াও হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা পাল্টা ধাওয়া দিলে সবাই পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে মো. রাকিব নামের অটোরিক্সা চালককে আটক করে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ মাসুম, মার্কেটিং বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজোয়ান হক সজিব, একই বিভাগের মো. রাসেল চৌধুরী, লোকপ্রশাসন বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের মাহমুদ সাকিব, আবদুল বাসেদ, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আদনান হোসেন সাহেদ, মো: রিফাতুল ইসলাম, আতিক রহমান আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের হেলপার জহিরুল ইসলাম ও চালক সুমন দাস আহত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের হেল্পার মো. জহির আহমেদ বলেন, 'গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় শহরের টমছম ব্রীজ থেকে বাস ইউটার্ন নেওয়ার জন্য আমি বাস থেকে নেমে সামনের অটোগুলোকে একটু সরতে বলি। তখন তারা কয়েকজন আমাকে ও ড্রাইভারকে বাজে ভাষায় কথা বলে এবং আমার গায়ে হাত তুলে। তখনই বাসে থাকা কিছু শিক্ষার্থী বাস থেকে নেমে আমাকে উদ্ধার করেন। তখনও তারা আমাদেরকে গালি ও হুমকি দিচ্ছিল। ওই ঘটনার জেরেই বুধবার রাতে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালিয়েছে।’
আটক হামলাকারী মো. রাকিব বলেন, 'আমি বাসায় ছিলাম। তখন আমাকে তারা ফোন দেয় গেইম খেলার জন্য। আমি আসার সাথে সাথেই তারা বাসে হামলা করে। আমি কিছুই করিনি। তবে যারা হামলায় জড়িত, আমি তাদের চিনি।’
এ বিষয়ে কোটবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস এম আরিফুর রহমান বলেন, 'যে সকল শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি এবং যেই ব্যক্তিকে শিক্ষার্থীরা তুলে নিয়ে এসেছে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মামলা করে তাহলে আমরা তদন্ত শুরু করবো।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ আহত শিক্ষার্থীদের ও তুলে আনা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাকে পুলিশ হেফাজতে দেয়া হয়েছে।’