শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

| ১১ বৈশাখ ১৪৩২

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে দূরে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট

ক্যাম্পাস বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:২০, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে দূরে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট

বাংলাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও ক্ষুদ্র জাতির ভাষা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণার লক্ষ্যে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (আমাই)। কিন্তু ভাষা নিয়ে গবেষণায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেই এ প্রতিষ্ঠানের।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এ ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ভবন থাকলেও ভাষা নিয়ে তেমন কোনো কার্যক্রম লক্ষণীয় নয়। বড় কলেবরে কোনো পূর্ণাঙ্গ গবেষণা শেষ করতে পারেনি তারা। দেশে বেশ কিছু বিপন্ন ভাষা চিহ্নিত করা হলেও সেগুলো রক্ষার উদ্যোগ নিতে পারেনি এ প্রতিষ্ঠান। ভাষা বিষয়ে বিভিন্ন আয়োজন, দিবস পালন, সেমিনার ইত্যাদি করেই কোটি কোটি টাকা খরচ করছে তারা। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে অনেক দূরে রয়েছে এ ইনস্টিটিউট। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকা, আর্থিক সংকট আর গবেষক সংকটের কথা বলে দায় সারছে কর্তৃপক্ষ।

ইনস্টিটিউটের একমাত্র বড় কাজ ‘নৃ-ভাষা বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’ ১২ বছরেও প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। বলা হয়েছিল এই সমীক্ষা মূলত বাংলাদেশে বসবাসরত সব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা পরিস্থিতি ও ভাষিক সম্প্রদায়ের বাস্তব অবস্থা ও অবস্থান নির্দেশ করবে। ২০১৩ সালে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ‘নৃ-ভাষা বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র কাজ শুরু করেছিল আমাই। কিন্তু এ কাজও শেষ করতে পারেনি। এ সমীক্ষার ১০ খন্ড বাংলা এবং ১০ খন্ড ইংরেজিতে প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু এক যুগেও প্রকাশনার কাজটি শেষ করা যায়নি।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি মাত্র খন্ড বাংলায় ছাপানো হয়। এই সমীক্ষায় কত ব্যয় হয়েছে, আর অগ্রগতি কতটুকু তা নিয়ে এখন কোনো তথ্যই নেই মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে, অর্থাৎ পুরোটাই জলে গেছে এই সমীক্ষার সব আয়োজন।

তথ্যমতে, বাংলাদেশের ৪১টি ভাষার মধ্যে ১৪টি বিপন্ন অবস্থায় আছে। সেগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না গেলে চিরতরে মুছে যেতে পারে বাংলাদেশের ১৪টি ভাষা। কিন্তু আমাই কর্তৃপক্ষের এ ১৪ ভাষা নিয়েও তেমন কোনো গবেষণা নেই। সাত তলাবিশিষ্ট আমাইয়ের নিজস্ব ভবন ভাষা গবেষণায় তেমন কোনো কাজে না এলেও অত্যাধুনিক অডিটরিয়ামে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সভা-সেমিনারের আয়োজন চলছে প্রায় নিয়মিতই।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, যেসব ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে সেগুলো কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়, গবেষণা করে কীভাবে পুনরুজ্জীবন করা যায় তা নিয়ে মূল কাজ এ ইনস্টিটিউটের। বিভিন্ন ধরনের ভাষা নিয়ে কাজ করছি আমরা। দেশে ভাষাবিজ্ঞানী বা ভাষা গবেষকের অভাব রয়েছে। আর্থিক সংকটের পাশাপাশি জনবল সংকট রয়েছে। সব মিলিয়ে এ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রমে যেভাবে গতি পাওয়ার কথা ছিল তা পায়নি। এ ইনস্টিটিউট যেন আসলেই আন্তর্জাতিক মানের হিসেবে গড়ে ওঠে সে চেষ্টা করছি।