
ফাইল ফটো
কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার অভিযোগে সারাদেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ১৬ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ, প্রতিবাদ ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। রাজধানীর সাতরাস্তা তেজগাঁওয়ে এ কর্মসূচি পালন করবে ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনের সভাপতি মো. মাশফিক ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রায় দেড়শ বছরের গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছে। অথচ সম্প্রতি ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ কর্তৃক উত্থাপিত তিন দফা দাবি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য চরম ক্ষতিকর। এ দাবির উদ্দেশ্য আসন্ন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা ও রাষ্ট্রের সংস্কার কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
এর আগে ঢাকার তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে ‘লাল অঙ্গীকার’ কর্মসূচি পালন করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। দুপুরে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি সাতরাস্তা মোড়ে ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এদিকে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে চাকরিতে নবম গ্রেডের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আটকে দেয়ার অভিযোগ করেছেন। সেইসঙ্গে বিএসসি ডিগ্রিধারী ছাড়া নামের আগে প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তারা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে গতকাল সংবাদ সম্মেলন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা পলিটেকনিকে সংবাদ সম্মেলন করে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা বলেন, কাগজে-কলমে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ১০ম গ্রেড থেকে ৯ম গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ ৩৩ শতাংশ হলেও বাস্তবে তা ১৫ থেকে ১৭ শতাংশের বেশি নয়। ফলে চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়েও অনেকে সহকারী প্রকৌশলী পদে উন্নীত হতে পারেন না।
মাশফিক ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন নিয়মিত মিথ্যাচার করছে এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বৈধ পরিচয় ব্যবহারে বাধা দিচ্ছে, যা গেজেট বহির্ভূত ও দেশের আইনের পরিপন্থী।
তিনি আরও জানান, গত ২৭ আগস্ট সরকার একটি ৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি এবং ১৪ সদস্যবিশিষ্ট ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে। সেখানে বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি রাখা হয়েছে, অথচ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতিনিধি কম। ৭ সেপ্টেম্বরের বৈঠকেও সমান প্রতিনিধিত্ব থাকার কথা থাকলেও বিএসসি প্রকৌশলীদের পক্ষ থেকে ৮ জন অংশ নেন, যাদের বেশিরভাগই অছাত্র। তিনি অভিযোগ করেন, পুরো কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিল কেবল বিএসসি প্রকৌশলীদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন করা। সেই দাবির এক বিন্দুও বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা তা মেনে নেবে না।
বুয়েটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রকৌশলীদের পদে ডিপ্লোমাধারীদের নিয়োগ দেয়া অযৌক্তিক। নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদ বলেন, দশম গ্রেড টেকনিক্যাল বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান পদে ডিপ্লোমাধারীদের জন্য বরাদ্দকৃত শতভাগ কোটা বাতিল করতে হবে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ব্যতীত কেউ নামের পাশে ইঞ্জিনিয়ারিং পদবি ব্যবহার করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। দশম গ্রেড থেকে প্রমোশন নিয়ে ডিপ্লোমাধারীরা নবম গ্রেডে যায়, এই নবম গ্রেড পদের ন্যূনতম যোগ্যতা হওয়া উচিত বিএসসি ডিগ্রি।