মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

| ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

দশদিন ক্লাস-পরীক্ষা নেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে

সোহেল হাওলাদার

প্রকাশিত: ১৯:৩৩, ১০ জুলাই ২০২৪

দশদিন ক্লাস-পরীক্ষা নেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে

ছবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলসহ তিন দাবি আদায়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা টানা কর্মবিরতী ১০ দিন পার করল। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত ১০ দিন ধরে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতির কর্মসূচিতে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল হয়ে পড়েছে।

প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল, সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভূক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে এই কর্মবিরতী পালন করে আসছেন শিক্ষকরা। দাবি আদায়ের জন্য সরকারপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষকরা।

১০ জুলাই, বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষকদের জন্য, পরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাখান করা হয়েছে। এটা বাতিল করতে হবে, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। প্রত্যয় স্কিম থাকবে না এটা আমি নিশ্চিত। কারণটা হলো আলোচনায় বসা মানেই উনারা জানেন এর পক্ষে কোনো যুক্তি দেখানো যাবে না।

টানা আন্দোলনে শিক্ষাঙ্গনে চলমান স্থবিরতার বিষয়ে এই শিক্ষক নেতা বলেন, আমরা শিক্ষক হয়ে ছেলে-মেয়েদের ক্লাসরুমে রাখছি না, তাদের ল্যাবরেটরিতে রাখতে পারছি না। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্ত তাদেরকে স্পষ্ট করে জানাতে চাই, এই ক্ষতিটা সামান্য ক্ষতি মনে হবে যদি তারা জানে পরবর্তী জেনারেশনের জন্য এটা কত সর্বনাশা প্রস্তাব আসছে যেখানে মেধাবীরা এই পেশায় আসবে না, তারা প্রস্তুত হবে না। কাজেই আমাদের দাবি মেনে নেওয়াটাই এখন যুক্তিযুক্ত।

শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মমিন উদ্দিন বলেন, শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে এখনো কোনো সমাধান আসেনি। আশা করছি সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবে, আমরা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে পারব। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষকতা পেশায় উৎসাহিত করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার জন্য, তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধা ঠিক রাখতে হবে।

শিক্ষকদের টানা কর্মসূচিতে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝুলছে তালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগীয় অফিস, সেমিনার কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগারের তালাও খুলছে না। শিক্ষকদের ডাকা কর্মসূচির পাশাপাশি কর্মবিরতী করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও। সবমিলে অচলাবস্থা বিরাজ করছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

শিক্ষকরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাসও পাননি শিক্ষক নেতারা।  

শিক্ষকদের কর্মবিরতীর কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের এই সময়ে বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিও। অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস এমনকি শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে শিক্ষক আন্দোলনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগারের তালাও খোলেনি। সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া এ অচলাবস্থার কারণে শেসনজটের শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।