মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

| ৪ চৈত্র ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দুই ঘন্টার রূদ্ধদ্বার বৈঠক

বিবৃতি প্রস্তুত ছিল, শুধু স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে: ইবির আন্দোলন প্রত্যাহারকারী

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ২৯ জুলাই ২০২৪

বিবৃতি প্রস্তুত ছিল, শুধু স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে: ইবির আন্দোলন প্রত্যাহারকারী

বিবৃতিটি আগেই প্রস্তুত ছিল, শুধু সেখানে তাদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আন্দোলন প্রত্যাহারকারী শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে দাবি করেছেন এক শিক্ষার্থী। অন্যান্য স্বাক্ষরকারীরাও একই কথা বলেছেন গণমাধ্যমে।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ওই শিক্ষার্থী লিখেন, বিভাগের সভাপতি আমাকে বলেছে, তোমাদের দাবি শুনবে তারা এবং ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করতে চায় প্রশাসব। হল খোলার জন্য কি কি দাবি আছে তা উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও লিখেন, বিবৃতিটি আগেই প্রস্তুত করা ছিলো শুধু সেখানে আমাদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। আমাদের দাবির সাথে এই বিবৃতির অসঙ্গতি দেখতে পেয়ে শিক্ষকদের বলি। এসময় তারা আমাকে অসঙ্গতিগুলো উল্লেখ করতে বললে আমি সেখানে ৯ দফা দাবি উল্লেখ করে স্বাক্ষর করি।

তিনি স্ট্যাটাসে বলেন, এখানে আমাকে নিয়ে এসে এই পেপারে যে সাক্ষর করাইছে এটার জন্যও আমি প্রতিনিধিত্ব করছি না। আমি গেছি এক উদ্দেশ্য কিন্তু আমাকে দিয়ে সাইন করানো হলো আন্দোলন প্রত্যাহারের। আমি এই আন্দোলন থামানোর কেউ না। আমি সমন্বয়কের পক্ষ থেকেও যাইনি। 

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আড়াই ঘন্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সকল ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিল নয় শিক্ষার্থী। সোমবার ওইসব শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়।

তবে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা সম্বলিত বিবৃতির সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে আরেকটি বিবৃতি দিয়েছেন আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট। এছাড়া দবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে দশদাটর দিকে ৯ শিক্ষর্থীদের সাথে বৈঠকে বসে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।

বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সামনে কোন ব্রিফিং না করেই চলে যান। পরে ৯ শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি সংবাদিকদের সরবারহ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা। শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি পূরণ হওয়ায় আন্দোলনের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন পাঁচ দফা দাবির কথা উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। দবিগুলো হলো, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক শিক্ষার্থী হেনস্তা না করা, শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, আন্দোলনে শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং অতিদ্রুত হলসমূহ খুলে দেয়া।

এদিকে সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয় ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা কুষ্টিয়া শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় আন্দোলন স্থগিত করা হয় বলে জানা গেছে। এসময় ইবির ১৮ শিক্ষার্থীসহ ৩০ জনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী আছেন বলে জানা গেছে।

এআই