শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

| ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আনসার পিসির অপসারণ চান ইবি শিক্ষক

‘ইবির নিরাপত্তা কর্মকর্তার অযথা খবরদারি করার বাসনা পেয়ে বসে’

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০০, ১ মে ২০২৪

‘ইবির নিরাপত্তা কর্মকর্তার অযথা খবরদারি করার বাসনা পেয়ে বসে’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভুক্ত ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে ৮টার পরে ইউনিট সমন্বয়কারী ও পরীক্ষার কার্যাদি সংশ্লিষ্ট ভবনে প্রবেশে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা দেয় প্রশাসন। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাত ১১টা ও সাড়ে ১১টার দিকে দুই শিক্ষক ভবনে প্রবেশ করে বলে অভিযোগ করেন দায়িত্বরত আনসাররা। গত ২৭ এপ্রিল তারা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে অবহিত করা হয়নি বলে জানান ওই শিক্ষকরা।

এ ঘটনায় ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী চৌধুরী তার অবস্থান পরিষ্কার করে অভিযোগকারী কুষ্টিয়া ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) আলতাফ হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিমের অপসারণ দাবি করেছেন। এছাড়া আনসারদের লিখিত অভিযোগে সময়ে বিষয়ে রাত ১১ টা লেখা হলেও তিনি সন্ধ্যার পর প্রবেশ করেছেন এবং কোনো আনসার তাকে বাধা দেননি বলে জানান। গতকাল বুধবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরারর একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন। অন্যদিকে ঝিনাইদহ আনসার ক্যাম্পের পিসি ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে তিনি এখন পর্যন্ত লিখিতভাবে কোনোকিছু জানাননি।

আনসারদের অভিযোগ সূত্রে, গুচ্ছের পরীক্ষা উপলক্ষ্যে পরীক্ষার আগের রাত অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল রাত ৮টার পরে ইউনিট সমন্বয়কারী ও পরীক্ষার কার্যাদি সংশ্লিষ্ট ভবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্ত এ নিষেধাজ্ঞা ও আনসারদের কথা অমান্য করে এবং রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এম ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে এবং ১১টার দিকে ড. শিবলী অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। দুইটি অভিযোগের লেখা ও ভাষা একইরকম লক্ষ্য করা যায়।

এদিকে, সন্ধ্যা থেকে অনুষদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী তার নিজস্ব কক্ষে একাডেমিক কাজ করছিলেন বলে দাবি তার। এসময় আনসার সদস্য তার কক্ষে এসে তাকে প্রক্টর বের হয়ে যেতে বলেছেন বলে জানান। পরে তিনি প্রক্টরকে ফোন দিলে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে বলেন বলে দাবি করেন তিনি। পরে আনসার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা চলে যান বলে জানান শিবলী। ভবনে প্রবেশে এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলে শিক্ষকদের অবহিত করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে ড. শিবলী বলেন, আমার বসার কক্ষে আলো জ্বলা দেখতে পেয়ে এই নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভেতরে হয়তো অযথা খবরদারি করার বাসনা পেয়ে বসে, যেমনটি তিনি কদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে আইসিটি বিভাগের ম্যাডাম জয়শ্রী সেন ও তার পরিবারে সঙ্গেও করেছেন।

ড. শিবলী আরও বলেন, আমি নিজেও ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একজন সদস্য। আমার বিরদ্ধে আনসার এর এক পিসি প্রক্টর মহোদয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে এখানে আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার করে উল্লিখিত পিসি আলতাফ হোসেন ও নোটপ্রদানকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম (সেলিম) কে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করছি। তাদের উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত অভিযোগনামায় আমি ভীষণভাবে অপমানিত। শিক্ষক সমাজের সম্মান রক্ষার্থে পদ থেকে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ভবনে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমি জানতাম না। কিছু জরুরি কাগজপত্র অফিসে ফেলে গিয়েছিলাম। পরে সেগুলো নিতে অফিসে গেলে আনসাররা বলেছিল ভবনে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পরে আমি প্রক্টরকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে কাগজপত্রগুলো নিয়ে চলে আসি।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে ভবনে মৌখিকভাবে প্রবেশ নিষেধ ছিল। তবুও ওই শিক্ষকরা ভবনে প্রবেশ করেছিল। পরে ২৭ এপ্রিল আনসারদের অভিযোগসহ নিরাপত্তাকর্মকর্তা আমাকে একটি নোট পাঠায়। আমি সোমবার (২৯ এপ্রিল) এটিকে রেজিস্ট্রার বরাবর প্রেরণ করেছি। কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

ভারাপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শনিবারে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এআই