বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন উল্লেখ করে গণসাক্ষরতা অভিযান এক মতবিনিময় সভায় বলা হয়েছে দেশের ৪০ দশমিক ৭২ শতাংশ শিশু-কিশোর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে রয়ে গেছে। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
৯ মে, বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জ: সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে গণসাক্ষরতা অভিযান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক আব্দুর রউফ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযান এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করা সত্ত্বেও বিবিএস এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আলোচনাপত্রে বলা হয়, গত বছর প্রায় ৪১ শতাংশ শিশু-কিশোর-যুবরা শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে ছিল। তবে সরকার ইতোমধ্যে ১০ লক্ষ ঝরেপড়া শিশুদের শিক্ষায় ‘দ্বিতীয় সুযোগ’ কার্যক্রমের আওতায় ‘আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন’ প্রকল্প উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাধারায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রকল্পভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা থাকে না বলে এ শিক্ষা টেকসই হয় না এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থীর তেমন কোনো কাজে আসে না।
সুপারিশে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে পিইডিপি-৫ পরিকল্পনায় মুলধারার কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষার বাইরে থাকা শিশু কিশোরদের এলাকা চিহ্নিত করে পকেট এরিয়া হিসেবে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতি শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ৫০০ টাকা স্টাইপেন্ড দেওয়ার কথাও উঠে আসে সুপারিশে। সরকারী, বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থাকে শিক্ষার উন্নয়নে আরও এগিয়ে আসার কথা বলা হয়।
রাশেদা কে চৌধূরী বক্তব্যে বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণ করা হয় বলে মনে করি। এসব প্রতিষ্ঠানে অনেকে পড়ালেখা শিখছে কিন্তু তাদের কোনো বিদ্যালয় ভর্তি নেবে না। বয়স না থাকলে কোথাও তারা ভর্তি হতে পারে না।
অনুষ্ঠানের আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোছা. নূরজাহান খাতুন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ এবং চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়।
সভায় বক্তারা বলেন, বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ করা, উপবৃত্তির সংখ্যা এবং পরিমাণ বাড়ানো, মিড ডে মিল সর্বজনীনভাবে চালু করা অতীব জরুরী।
তারা বলেন, শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটে ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। সেইসাথে কারিগরি শিক্ষাকে আরো বেশি বাজার উপযোগী করে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার উপরও জোর দেন বক্তারা।
এজেড