বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

| ৪ পৌষ ১৪৩২

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১৮ সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১৮ সাংবাদিক

অভিবাসন খাতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেয়েছেন ১৮ জন সাংবাদিক। 

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও’র বাংলাদেশ প্রধান ম্যাক্স টুনন ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের রেইজ প্রকল্পের পরিচালক যুগ্ম সচিব ড. এ.টি.এম. মাহবুব-উল করিম। 
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।

আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য ও বাংলাদেশের অভিবাসন খাতে বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান।

অভিবাসন খাতের সাংবাদিকতাকে স্বীকৃতি দিতে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো এই অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করে ব্র্যাক। এ বছর মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের এক দশক পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রত্যাশা-২ প্রকল্প এবারের পুরস্কার দিয়েছে।

এবার জাতীয় দৈনিক বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন দৈনিক সমকালের রাজীব আহমদ, দ্বিতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের রাসেল আহমেদ এবং যৌথভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কানিজ ফাতেমা ও প্রথম আলোর মো. মহিউদ্দিন। 

আঞ্চলিক পত্রিকা বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলার পত্রিকার তরিকুল ইসলাম মোহাম্মদ হাসান, দ্বিতীয় হন দৈনিক গ্রামীণ দর্পণের মোহাম্মদ শরীফ ইকবাল এবং তৃতীয় হন দৈনিক সুবর্ণগ্রামের আয়শা সিদ্দিকা।অভিবাসন হতে হবে নিরাপদ। ইউরোপ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপের আওতায় বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী নেবে। পাশাপাশি বিদেশ-ফেরতদের রিইন্ট্রিগেশন গুরুত্বপূর্ণ। যেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যায় তাদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত।

অনলাইন বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কামরান সিদ্দিকী, জসিম উদ্দিন ও সালেহ শফিক, দ্বিতীয় হন জাগোনিউজ২৪-এর রায়হান আহমদ এবং তৃতীয় হন বাংলাভিশনের মো. আবদুল্লাহ।

টেলিভিশন সংবাদ বিভাগে প্রথম হয়েছেন চ্যানেল ২৪-এর সম্রাট হোসেন, দ্বিতীয় নিউজ ২৪-এর মাসুদা খাতুন এবং তৃতীয় এখন টিভির সাজিদ আরাফাত। অনুসন্ধানী টেলিভিশন প্রোগ্রাম বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের তালাশ। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের নাজমুল সাঈদ এবং রাকিবুল হাসান এই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। রেডিও বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন রেডিও তেহরানের ঢাকার প্রধান বাদশা মিয়া। বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদপত্র এবং প্রাইজমানির চেক তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে বলেন, ‘অভিবাসীদের কথাগুলো তুলে ধরেন সাংবাদিকরা, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ 

বাংলাদেশ থেকে অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অভিবাসন হতে হবে নিরাপদ। ইউরোপ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপের আওতায় বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী নেবে। পাশাপাশি বিদেশ-ফেরতদের রিইন্ট্রিগেশন গুরুত্বপূর্ণ। যেসব দেশে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যায় তাদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘অভিবাসন নিয়ে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখি সংখ্যাটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সংখ্যার পেছনে যে মানুষেরা আছে সেই মানুষগুলোর গল্প সামনে আসা উচিত। আমি বিদেশ যেখানেই যাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাকিত্ব ও তাদের নানা সংকটের কথা শুনি। এই মানুষগুলোর পাশে থাকতে হবে।’ 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও’র বাংলাদেশ প্রধান ম্যাক্স টুনন বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অভিবাসন খরচ অনেক বেশি। এই সমস্যার সমাধান জরুরি। কেন একজন মানুষকে বিদেশ যেতে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করতে হবে?’ 

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা নীতি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। অভিবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা মধ্যপ্রাচ্য বা যেসব দেশে যাচ্ছে সেখান থেকেও প্রতিবেদন করতে হবে। এই দেশগুলোতে আইএলও কাজ করছে। আমরা এক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারি।’

অনুষ্ঠানে মাইগ্রেশন ও মিডিয়া নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘অভিবাসনের সঙ্গে এখন কৃষি, অর্থনীতি, প্রবাসী আয়সহ অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে। সেসব নিয়ে বৈচিত্র্যময় প্রতিবেদন হতে পারে।’