
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৫ এর প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর মগবাজারে আলফালাহ মিলনায়তনেেএর আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেনবাল ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
বক্তব্যে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবির জনগণের মাঝে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা ও স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। জনগণ শিবিরের কার্যক্রমকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছে, যা শিবিরের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। তবে এই সুযোগের সঙ্গে সঙ্গে শিবিরের দায়িত্ব এবং চ্যালেঞ্জও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং শিবিরের নেতৃত্বকে আরও দূরদর্শী হতে হবে এবং যুগের পরিবর্তন অনুযায়ী কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এই নেতৃত্বই শিবিরকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পথ দেখাবে এবং জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হবে।
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামের সঞ্চালনায় ও কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৫ এর দু’দিনব্যাপী প্রথম সাধারণ অধিবেশনটি দারসুল কুরআনের মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হয়।
দারসুল কুরআন পেশ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের শহীদ সামিউ আমান নূর ভাইয়ের গর্বিত বাবা মো: আমান।
দু’দিনব্যাপী অধিবেশনে প্রথম দিনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
অধিবেশনে ২০২৫ সেশনের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে ২০২৫ সাল দেশ ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য টার্নিং পয়েন্ট উল্লেখ করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২০২৫ সাল আমাদের জন্য এক ঐতিহাসিক ও চ্যালেঞ্জের বছর। এই বছরটি কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং ইসলামী আন্দোলনের জন্যও একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। তিনি বলেন, “আমাদের সাংবিধানিক অধিকার এক সময় ফ্যাসিস্ট সরকার কেড়ে নিয়েছিল। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি। দীর্ঘ সতেরো বছর ধরে শতশত শাহাদাত, হত্যা, গুম, নির্যাতন, নিষ্পেষণ, অসংখ্য ভাইয়ের ক্যারিয়ার বিসর্জন এবং বহু মানুষের চোখের পানির বিনিময়ে আজ আমরা এই নেয়ামত পেয়েছি। আমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার যে নেয়ামত এসেছে, তার যথাযথ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আমরা যদি এই নেয়ামতকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের আরও বরকত ও সুযোগ দান করবেন, ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, মানুষ একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে জুলাই ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষিত যে পরিবর্তন; রাষ্ট্রের কাঙ্খিত সংস্কারসমূহ এখনো সেভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না। এ কার্যক্রমে আমরা খুবই ধীরগতি লক্ষ করছি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান, ড. আজম ওবায়েদুল্লাহ, নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং মঞ্জুরুল ইসলাম।