শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

| ২৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

হায়দারগন্জ তাহেরিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:১৫, ১২ নভেম্বর ২০২৪

হায়দারগন্জ তাহেরিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই

লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার হায়দারগন্জ তাহেরিয়া আর এম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মজুমদার গত ১৫ বছরে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীর মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মাদ্রাসায় ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বহিস্কার চেয়ে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। তার সব অন্যায়-অত্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরা কমিটিকে অবহিত করলেও কোন প্রতিকার পাননি।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ মজুমদারের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন। তারা গভর্নিং বডির কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছেন।

এর প্রেক্ষিতে ১ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসায় পরিচালনা কমিটির সভায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এক মাসের ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ছাত্রদের অভিযোগ তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানানো হয়। কমিটি দশ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের সিদ্ধান্ত হলেও এক মাসেরও কমিটি গঠন করা হয়নি। এরপর গভর্ণিং বডির এক সভায় নানা অভিযোগের কারণে ও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষকে সেইফ এক্সিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও তা না করে মাদ্রাসার গভর্নিং বডি গঠন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন আব্দুল আজিজ মজুমদার। অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন করার বিধান থাকলেও তা করা হয়নি বলে জানা গেছে।

গত ১৫ বছরে মাদ্রাসার অভ্যন্তরীন অডিট কমিটিকে অকার্যকর করে অর্থনৈতিক কোনো হিসাব না দেওয়ারও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

চিঠিতে তারা বলেছেন, তার কার্যকলাপের কোন প্রতিবাদ করলেই তিনি পুলিশের ভয় দেখাতেন এবং বলতেন নসরুল হামিদ বিপুর সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি ওলামালীগের সদস্য বলে পরিচয় দিতেন। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট অর্থের বিনিময় বিক্রয় করতেন অধ্যক্ষ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গভর্নি বোডির সদস্য সৈয়দ তাহের ইজ্জদ্দীন জাবেরী বলেন, বর্তমান অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ নানা দুর্ণীতির সাথে জড়িত। গত ১৫ বছরে তিনি আর্থিক অনিয়মসহ অনেক দুর্নীতি করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্রসহ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু সভাপতি আনোয়ার হোসেন তাহের আল জাবেরী আল মাদানীর কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত করতে অধ্যক্ষ বাধা দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আবদুল আজিজ মজুমদার বলেন, আমি কোনো দুর্নীতি করি নাই। গভর্নিং বডি আমার পক্ষে আছে। যারা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিচ্ছে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি আনোয়ার হোসেন তাহের আল জাবেরী আল মাদানীর কাছে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।